সেন্ট মার্টিন দ্বীপ: বাংলাদেশের এক টুকরো স্বর্গ
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ, যা'কে বলা হয় বাংলাদেশের এক টুকরো স্বর্গ।
এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে বঙ্গোপসাগরের বুকে অবস্থিত একটি প্রবাল দ্বীপ। এটি বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ এবং বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপের আয়তন প্রায় ৮.৯ বর্গকিলোমিটার। এর আকৃতি লম্বা ত্রিভুজআকার। দ্বীপের দৈর্ঘ্য প্রায় ৪.৫ কিলোমিটার এবং প্রস্থ প্রায় ২.৫ কিলোমিটার। দ্বীপের উপকূলরেখা প্রায় ১৬ কিলোমিটার।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপের অধিবাসীরা মূলত মুসলিম। দ্বীপে প্রায় ১০,০০০ লোকের বাস। দ্বীপের মানুষের প্রধান পেশা হল মৎস্য শিকার ও পর্যটন।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অসাধারণ। দ্বীপের চারপাশ ঘিরে রয়েছে বিস্তৃত প্রবাল প্রাচীর।
প্রবাল প্রাচীরে রয়েছে নানা রঙের অসংখ্য সামুদ্রিক প্রাণী। দ্বীপের উপকূলে রয়েছে সুন্দর সুন্দর সৈকত। সৈকতগুলো সাদা বালু দিয়ে তৈরি এবং জল পরিষ্কার ও নীল।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপের প্রধান আকর্ষণ হল প্রবাল প্রাচীর বা কোরাল রীফ। প্রবাল প্রাচীরে রয়েছে নানা রঙের অসংখ্য সামুদ্রিক প্রাণী, যেমন মাছ, শামুক, কাঁকড়া, তারামাছ, ইত্যাদি। প্রবাল প্রাচীরের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য পর্যটকরা সেন্ট মার্টিন দ্বীপে আসেন।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপের অন্যতম আকর্ষণ হল সমুদ্র সৈকত।
সৈকতগুলো সাদা বালু দিয়ে তৈরি এবং জল পরিষ্কার ও নীল। সৈকতে সাঁতার কাটা, সূর্যস্নান করা, ও রোদ পোহানোর জন্য পর্যটকরা সেন্ট মার্টিন দ্বীপে আসেন।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপে রয়েছে বেশ কয়েকটি ঐতিহাসিক স্থান। এর মধ্যে রয়েছে মসজিদ, খানকাহ, ও কবরস্থান।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণ। প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ভ্রমণ করেন।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের সঠিক সময়:
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ভ্রমণের জন্য সেরা সময় হল নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস। এই সময় আবহাওয়া মনোরম থাকে এবং বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম থাকে।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপে যাওয়ার উপায়:
সেন্ট মার্টিনে যাওয়ার জন্য আপনি ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে বিমানে যেতে পারেন। ঢাকা থেকে সেন্ট মার্টিনের দূরত্ব প্রায় ৩৬০ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ যেতে হলে প্রথমে কক্সবাজার যেতে হবে। কক্সবাজার থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে যাওয়ার জন্য লঞ্চ বা ট্রলার পাওয়া যায়। লঞ্চ বা ট্রলারে করে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ যেতে সময় লাগে প্রায় দুই ঘন্টা।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ থেকে কক্সবাজার ফিরতে হলেও লঞ্চ বা ট্রলার ব্যবহার করতে হয়।
সেন্ট মার্টিনে থাকার ব্যাবস্থা:
সেন্ট মার্টিনে পৌঁছানোর পর, আপনি দ্বীপের বিভিন্ন হোটেল বা রিসর্টে থাকতে পারেন। দ্বীপে থাকার জন্য বিভিন্ন ধরনের হোটেল এবং রিসর্ট রয়েছে, তাই আপনার বাজেট এবং পছন্দ অনুযায়ী আপনি থাকার ব্যবস্থা করতে পারবেন।
সেন্ট মার্টিনের প্রধান আকর্ষণগুলি হল সৈকত, ঝাউবন এবং ম্যানগ্রোভ বন। দ্বীপের বিভিন্ন সৈকত ঘুরে দেখতে ভুলবেন না।
সেন্ট মার্টিনের সবচেয়ে জনপ্রিয় সৈকত বা স্থানগুলো হল:
হ্যাভেন আইল্যান্ড: এই সৈকতটি সেন্ট মার্টিনের সবচেয়ে সুন্দর সৈকতগুলির মধ্যে একটি। এই সৈকতটি তার স্বচ্ছ জল এবং সাদা বালির জন্য বিখ্যাত।
ব্ল্যাক স্যান্ড বিচ: এই সৈকতটি তার কালো বালির জন্য বিখ্যাত। এই সৈকতটি সেন্ট মার্টিনের উত্তর-পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত।
ডেভিলস আইল্যান্ড: এই সৈকতটি তার সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্যের জন্য বিখ্যাত। এই সৈকতটি সেন্ট মার্টিনের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত।
এছারা সেন্ট মার্টিনের ঝাউবন এবং ম্যানগ্রোভ বনও ঘুরে দেখতে পারেন। এই বনগুলি দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরও বৃদ্ধি করে।
সেন্ট মার্টিনে ঘুরতে গেলে সৈকতে জল ছিটিয়ে খেলবেন না এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য সচেতন থাকবেন।
সেন্ট মার্টিনে ঘুরতে যাওয়ার জন্য কিছু অতিরিক্ত টিপস:
সেন্ট মার্টিনে যাওয়ার আগে, আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে নিন।
সেন্ট মার্টিনে যাওয়ার সময়, আপনার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে নিতে ভুলবেন না।
সেন্ট মার্টিনে গেলে, স্থানীয় সংস্কৃতি এবং রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবেন।
আশা করি এই টিপসগুলি আপনার সেন্ট মার্টিনে ঘুরতে যাওয়ার অভিজ্ঞতাকে আরও আনন্দদায়ক করে তুলবে।
সেন্ট মার্টিনের বিষয়ে আর কোনও প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না!
ধন্যবাদ..
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন