ব্রয়লার মুরগীর খারাপ দিক এবং বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট
ব্রয়লার মুরগি হল এক ধরনের দ্রুত বৃদ্ধির মুরগি যা মাত্র 4-5 সপ্তাহের মধ্যে খাওয়ার উপযোগী হয়ে ওঠে। ব্রয়লার মুরগি উৎপাদনের জন্য বিশেষ ধরনের খাদ্য, ওষুধ এবং পরিবেশগত ব্যবস্থা ব্যবহার করা হয়। এসব কারণে ব্রয়লার মুরগিতে কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকতে পারে।
ব্রয়লার মুরগীর খারাপ দিক:
- অতিরিক্ত ওজন: ব্রয়লার মুরগি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়, যার ফলে তাদের শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমে যায়। অতিরিক্ত চর্বি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
- অ্যান্টিবায়োটিক ও হরমোন ব্যবহার: ব্রয়লার মুরগিকে রোগ প্রতিরোধের জন্য উচ্চ মাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক এবং বৃদ্ধির জন্য হরমোন দেওয়া হয়। অ্যান্টিবায়োটিক ও হরমোন খাদ্যের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে এবং স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
- খাদ্যে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার: ব্রয়লার মুরগিকে খাওয়ানো হয় বিশেষ ধরনের খাদ্য, যাতে প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থের পাশাপাশি রাসায়নিক পদার্থও থাকে। এই রাসায়নিক পদার্থ স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
নির্দিষ্টভাবে, ব্রয়লার মুরগি খেলে যেসব স্বাস্থ্যঝুঁকি হতে পারে তার মধ্যে রয়েছে:
- হৃদরোগ: ব্রয়লার মুরগিতে প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকে, যা হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
- ডায়াবেটিস: ব্রয়লার মুরগিতে প্রচুর পরিমাণে চর্বি এবং ক্যালোরি থাকে, যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
- ক্যান্সার: কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে ব্রয়লার মুরগিতে থাকা কিছু রাসায়নিক পদার্থ ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে।
- অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া: ব্রয়লার মুরগিতে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে মানুষের শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
শিশুদের জন্য ব্রয়লার মুরগি খাওয়ানোর ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি বিবেচনা করা উচিত:
- ব্রয়লার মুরগি যতটা সম্ভব কম খাওয়ানো উচিত।
- ব্রয়লার মুরগি কেনার সময় ভাল মানের ব্রয়লার মুরগি কেনা উচিত।
- ব্রয়লার মুরগি রান্না করার সময় ভালো করে রান্না করা উচিত।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট:
বাংলাদেশে ব্রয়লার মুরগি পালন একটি লাভজনক ব্যবসা। বর্তমানে বাংলাদেশের মোট মাংস উৎপাদনের প্রায় ৭০% আসে ব্রয়লার মুরগির মাংস থেকে। ব্রয়লার মুরগি পালনের জন্য বাংলাদেশে ব্যাপক সরকারি ও বেসরকারি সহায়তা রয়েছে।
বাংলাদেশে ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে জনগণের মাঝে ব্রয়লার মুরগির চাহিদাও বেড়েছে। তবে, ব্রয়লার মুরগির স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে জনগণের মধ্যে সচেতনতা কম।
ব্রয়লার মুরগির স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। ব্রয়লার মুরগির স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নেওয়া যেতে পারে:
- ব্রয়লার মুরগি পালনের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক ও হরমোন ব্যবহারের পরিমাণ কমানো।
- ব্রয়লার মুরগিকে খাওয়ানো খাদ্যে রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার কমানো।
- ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন ও বিপণনের ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা।
এই পদক্ষেপগুলি নেওয়া হলে ব্রয়লার মুরগির স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানো সম্ভব হবে।
তাছাড়া, বাংলাদেশে ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন ও বিপণন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই, ব্রয়লার মুরগির স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আর খামু না
উত্তরমুছুন